বিবেক আছে বলেই মানুষ পশুপাখি থেকে আলাদা। বিবেকের কাজ খায়েশের পিছু পিছু যাওয়া থেকে বারণ করা। আপনি যদি বিবেককে পায়ে ঠেলে খায়েশের গোলামি করেন, আপনি তখন জন্তু-জানোয়ারের চেয়েও নিকৃষ্ট হবেন। শিকারি কুকুর আর রাস্তাঘাটে ঘোরাঘুরি করা কুকুর দেখলেই বিষয়টা বুঝবেন। শিকারি কুকুরের আলাদা সম্মান আছে। দাম আছে। কারণ, ইচ্ছার ওপর লাগাম টানার ক্ষমতা আছে তার। শাস্তির ভয়ে কিংবা মনিবের কৃতজ্ঞতাস্বরূপ তারা মনিবের শিকার নিজের কাছে নিরাপদে রাখে।
নাবিকহীন জাহাজ যেমন স্রোতের টানে উদ্দেশ্যহীন ভেসে যায়, খায়েশ ঠিক সেরকম মানুষের স্বভাবকে ইচ্ছেমতো নাচায়। সমঝদার মানুষ হিসেবে বলুন তো: খায়েশের লেজ ধরে একবার চলা শুরু করলে, ভবিষ্যতে এর যে খারাপ পরিণাম হবে সেটা সহ্য করা সহজ, নাকি শুরুতেই খায়েশ চেপে ধরার কষ্ট সহ্য করা সহজ?
খায়েশের অনুসরণের সবচেয়ে করুণ পরিণাম হচ্ছে মানুষ সেই খারাপ কাজটা করতে একসময় আর কোনো মজা পায় না। কিন্তু অভ্যাসবশত করে যায়। নিজেকে সেখান থেকে উদ্ধার করতে পারে না। এ ধরনের খারাপ কিছুতে অভ্যস্ত হলে তা আসক্তিতে রূপ নেয়। মদপান কিংবা অবাধ যৌনসম্পর্কে যারা আসক্ত তাদের অবস্থা এমনই। খায়েশের মুখে লাগাম আঁটবেন কীভাবে?
.
মনের লিমিটলেস খায়েশের উপর লাগাম আঁটার নানান কলাকুশল নিয়ে প্রত্যেক যুগেই বিজ্ঞ আলিমরা তাদের জাতিকে ওয়াজ নসিহত করে গিয়েছেন। এমনি এক আলিম, ইমাম ইবনুল জাওযী রহ., যিনি তাঁর যুগের মানুষদের উদ্দেশ্যে ওয়াজ নসিহত করার পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রচনা করেছেন অসংখ্য কিতাব। তাঁর সেই অসংখ্য রচনার ভিতর একটি বিখ্যাত কিতাব হচ্ছে ‘আত-তিব্বুর রুহানী’, বাংলায় যা রূপ নিয়েছে ‘মনের ওপর লাগাম’।
বইয়ের ৩০টি অধ্যায়জুড়ে এসব অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচিত হয়েছে।